সংসারে অভাব গোঁছাতে কিশোরীকে পাঠিয়েছিল সৌদি আরব। স্থানীয় দালাল আব্দুর রাজ্জাক বলেছিল তাকে ভাল বেতন দেয়া হবে। অবশেষে বেতনে পরিবর্তে ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ রোজ শনিবার রাত্র দেড় ঘটিকায় সময় লাশ হয়ে দেশে ফিরল কিশোরী। লাশ পেয়ে বাড়ীতে এখন চলছে শোকের মাতম। কিশোরীর মা বাবা আর আত্মীয় স্বজনের কান্নায় ভারী হয়ে উঠছে আকাশ বাতাশ।
ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামে। জানা গেছে, নূরপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও নাসিমা বেগমের অবিবাহিত মেয়ে উম্মে কুলসুমকে প্রতিবেশী দালাল রেম্বর আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৩৫) এর মাধ্যমে মেসার্স এমএইচ ট্রেড এন্টারন্যাশনাল (আরএল নং-১১৬৬),ফকিরাপুল, ঢাকা এর মাধ্যমে গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরবে পাঠানো হয়। যার পাসপোর্ট নং-ইএ ০০৫০৭৭৯।
গত ১৭ আগষ্ট ২০২০ তারিখে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক বরাবরে উম্মে কুলসুমের পিতা শহিদুল ইসলামের লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, তার মেয়ে মারাত্বক শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। অভিযোগে তিনি তার মেয়ের বকেয়া আট মাসের বেতন ও লাশ বাংলাদেশে ফেরৎ এনে রিক্রুটিং এজেন্সীর বিরুদ্ধে শান্তিমূলক ব্যবস্থার আবেদনও জানান তিনি। গত ২৪ জুন ২০২০ তারিখে উম্মে কুলসুমের মা নাসিরনগর থানার সাধারণ ডায়েরী নং ৮৩৪ এ জানা গেছে প্রতিবেশী দালাল আব্দুর রাজ্জাক ২০১৯ সালের ৭ এপ্রিল তার মেয়েকে গৃহ কর্মীর কাজ দিয়া সৌদি আরবের রিয়াদে পাঠায়। সেখানে তার মেয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়। এ খবর দালালরা রাজ্জাককে জানানোর পর সে উম্মে কুলসুমকে ওই বাসা থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে দিবে বলে আবারও তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়। পরবর্তীতে এ কথা কাউকে জানালে, তাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়।
সৌদি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাড়ীতে এক ভিডিও কলে শোনা যাচ্ছে উম্মে কুলসুম তার মা বাবা আত্মীয় স্বজনকে বলেছে গৃহকর্তা তাকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রচন্ড মারপিট ও নির্যাতন করায় উম্মে কুলসুম নিরুপায় হয়ে পঙ্গু অবস্থায় বাসা থেকে পালিয়ে গিয়ে সৌদি পুলিশের মাধ্যমে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ভিডিও চিত্রে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্নও দেখা গেছে। ঘটনার পর থেকে দালাল পলাতক রয়েছে।